আজ-  ,


সময় শিরোনাম:
«» উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে- সিসিক মেয়র «» ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযান ও জরিমানা «» জুড়ীতে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জাকারিয়া শিবলুর সমর্থনে গোয়ালবাড়ী বাজারে নির্বাচনী জনসভা «» কমলগঞ্জের মিরতিংগা চা বাগানে কর্মচারীদের বেতনসহ যাবতীয় বকেয়া পাওনাদি আদায়ের দাবীতে অবস্থান কর্মসুচি ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত «» নকল হিজড়াদের আইনের আওতায় আনা হবে- সিলেটে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান «» Press release «» «» মৌলভীবাজারে দুইদিনব্যাপী ৪৫তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উদ্বোধন «» মৌলভীবাজারে আসছেন হযরতুল আল্লামা মুফতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন আত্ব তাহেরী «» বগুড়া আদমদীঘিতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক মোটরসাইকেল আরোহীদিন মৃত্যু  

লাউয়াছড়া বন কর্মকর্তা মোনায়েমের উক্তি “বন যতদিন চুরি ততদিন”

স্টাফ রিপর্টার :: “বন যতদিন থাকবে, ততদিন গাছ চুরি হবে। ১২৫০ হেক্টরের লাউয়াছড়া বিশাল বন স্বল্প এই জনবল দিয়ে রক্ষা করা খুবই কঠিন।” বনের গাছ চুরি নিয়ে এ ধরণের উক্তি করলেন, মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন।

এছাড়াও তিনি লাউয়াছড়ায় গাছ চুরি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ বিষয়ে সাংবাদিকদেরও হুমকি প্রদান করেন। সাম্প্রতিক লাউয়াছড়া বন থেকে গাছ চুরি সম্পর্কে মুঠোফোনে বক্তব্য গ্রহণকালে এসব কথা বলেন তিনি।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের ১২৫০ হেক্টরের লাউয়াছড়াকে ১৯৯৬ সালে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। জাতীয় এই উদ্যানটিতে বিশ্বের বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকসহ বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণির আবাসস্থল ও জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। এ বনে রয়েছে বিরল প্রজাতির সহ বিভিন্ন জাতের মূল্যবান গাছ গাছালি আছে। তবে এই বনের টিলা থেকে রাতের আঁধারে গাছ চুরি অব্যাহত রয়েছে। অতিসম্প্রতি বনের দু’টি টিলা ঘুরে কেটে নেয়া ৬টি গাছের তাজা গুড়িও পাওয়া যায়। এতে বন্যপ্রাণীর জন্য বাড়ছে প্রতি নিয়ত হুমকির কারন।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বাঘমারা বন ক্যাম্প সংলগ্ন মন্ত্রীরটিলা থেকে অতি সম্প্রতি মেহগনি ও চিকরাশি প্রজাতির ছয়টি গাছ চুরি হয়েছে। স্বাক্ষী হয়ে পড়ে আছে এসব গাছের গুড়ি। বাঘমারা ক্যাম্পের সম্মুখে ও মুজিবের উঠনি টিলার কিছু অংশে গত আগষ্ট মাসের শেষে কেটে নেয়া চারটি গাছের গোড়া পরিত্যক্ত পাওয়া যায়। কেটে নেয়া গাছের গুড়ি মাটি ও পাতা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।

গাছ চুরির ফলে বনের মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে। তবে স্বল্প জনবলের কারণে বনের বিশাল এলাকা দেখাশুনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে বলে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ দাবি করছে। উদ্যানের লাউয়াছড়া, কালাছড়া ও চাউতলী তিনটি বনবিটের মধ্যে বিট কর্মকর্তাসহ আছেন মাত্র ১২ জন। এদের সাথে বন দেখাশুনায় জাতীয় উদ্যান কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটির লোকজন থাকলেও এ কমিটির কিছু অসাধু লোকও গাছ চুরির সাথে সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন স্থায়ী বাসিন্দারা জানান, দু’একদিন পর পরই গভীর রাতে কেটে নেয়া হয় গাছ। এসব বিষয়ে কিছু বলতে গেলেই রেঞ্জ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ক্ষোব্দ হয়ে উঠেন।

গাছ গাছালি চুরি হওয়ায় বনের গভীরতা হ্রাস ও ফাঁকা হচ্ছে টিলাভূমি। কমে যাচ্ছে বন্যপ্রাণীর খাদ্যের উৎস। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘ দিন ধরে রাতে বনের ভেতর থেকে বৃহদাকার গাছ গাছালি কেটে পাচার করছে। কেটে নেয়া এসব গাছের খন্ডাংশ পিকআপ ও ঠেলাগাড়ি যোগে দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়। ফলে হুমকির মুখে লাউয়াছড়া উদ্যানের জীববৈচিত্র্য।

গাছ চুরি সম্পর্কে লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, বন যতদিন থাকবে, গাছ চুরি হবে ততদিন। স্বল্প জনবল দিয়ে ১২৫০ হেক্টরের লাউয়াছড়া বিশাল বন রক্ষা করা খুবই কঠিন। তাছাড়া সাংবাদিকেরা এসব বিষয় নিয়ে বেশি লেখালেখি করে। বর্তমানে কোন গাছ চুরি হচ্ছে না এবং গাছের গুড়িগুলো পূর্বের বলে দাবি করেন তিনি ।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, স্বল্প জনবল হলেও বন রক্ষায় আমাদের যথারীতি দায়িত্ব রয়েছে। গাছ চুরি প্রতিরোধে আমরা তৎপর রয়েছি। গাছ চুরি হওয়ার কোন সংবাদ আমার কাছে নেই। তারপরও অভিযোগের বিষয়ে গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।